ঢাকা,সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

সৌদির কাছে দ্বীপ হস্তান্তরে মিশরীয় আদালতের বাধা

মিশরের অধীনে থাকা লোহিত সাগরের দুটো দ্বীপ সৌদি আরবের হাতে তুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছে মিশরের একটি আদালত।

প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল-সিসি গত এপ্রিল মাসে সৌদি আরব সফরে গিয়ে বাদশাহ সালমানকে কথা দিয়ে এসেছিলেন যে তিনি সানাফির ও তিরান নামের এই দুটো দ্বীপ ফিরিয়ে দেবেন।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মিশরে বিক্ষোভের মধ্যেই আদালতের এই রায় ঘোষণা করা হলো।

খুব ছোট দ্বীপ দুটি সিনাইয়ের দক্ষিণে লোহিত সাগরের মুখে অবস্থিত।

১৯৮২ সাল থেকে এখানে কিছু মিশরীয় সৈন্য এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে, এছাড়া দ্বীপদুটিতে কোন মানুষের বসতি নেই।

এই জায়গাটা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই জলপথটি ইসরাইল ব্যবহার করে লোহিত সাগরে ঢোকার জন্য।

বলা হয়, দ্বীপ দুটির মূল মালিক সৌদি আরব, তারাই ১৯৫০ সাল থেকে মিশরকে এগুলো পাহারার দায়িত্ব দিয়েছিল।

ইসরাইল ১৯৫৬ এবং ১৯৮২ সালে দুবার দ্বীপ দুটি দখল করে নিয়েছিল – তবে পরে তারা এগুলো আবার মিশরকেই ফেরত দেয়।

এর পর ২০১৬ সালে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি সিদ্ধান্ত নেন যে দ্বীপ দুটি তিনি সৌদি আরবকে ফিরিয়ে দেবেন।

কিন্তু মিশরে এর তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয় – যার পরিণতিতে ১৫০ জন লোকের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে।

অনেকে অভিযোগ করেন যে আল-সিসি মিশরের ভুখণ্ড সৌদি আরবকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। খালেদ আলি নামে একজন অধিকারকর্মী এ নিয়ে একটি মামলা করেন।

সেই মামলার রায়ে এখন মিশরের স্টেট কাউন্সিল নামের প্রশাসনিক আদালত সিসির সিদ্ধান্ত খারিজ করে রায় দেয়, দ্বীপ দুটি মিশরের অধীনই থাকবে।

এই রায়ের সময় আদালতে অনেকে হর্ষধ্বনি করেন এবং শ্লোগান দেন ‘এই দ্বীপ মিশরেরই’।

সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে, তবে উচ্চতর প্রশাসনিক আদালত যদি তা বহাল রাখে তাহলে এ সিদ্ধান্ত আইনি বাধ্যবাধকতা পেয়ে যাবে।

রাজনৈতিকভাবে প্রেসিডেন্ট সিসির জন্য এই রায় বিব্রতকর। কারণ তিনি বলে আসছেন, এই দ্বীপগুলো বরাবরই সৌদি আরবেরই ছিল।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

পাঠকের মতামত: